ঈদ সামনে রেখে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের অর্থনীতি। বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ছে। এক্ষেত্রে অর্থের বড় জোগান আসছে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের বোনাস, গতিশীল অভ্যন্তরীণ বাজার, জাকাত ও ফিতরা থেকে। এ ছাড়াও অর্থের অন্যতম একটি উৎস রেমিট্যান্স (প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ) বেশখানিকটা বেড়েছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক নেতা, এমপি, মন্ত্রীরা ছুটছেন গ্রামে। তাদের ঈদ শুভেচ্ছা ও সাহায্য-সহযোগিতার অর্থে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিতে বড় ঢেউ লেগেছে।
ঈদের অর্থনীতি নিয়ে সরকারিভাবে এখনো কোনো গবেষণা না হলেও বেসরকারি গবেষণা অনুসারে ঈদ, রমজান ও বৈশাখী উৎসব ঘিরে অর্থনীতিতে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকার অতিরিক্ত লেনদেন হবে। এ টাকার বড় অংশই যাবে গ্রামে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ভোগবিলাস খাতেই বেশিরভাগ টাকা যাচ্ছে। তবে কিছু অংশ যাচ্ছে গ্রামের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পভিত্তিক উৎপাদন খাতে। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ডক্টর এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, রমজান ও ঈদের মতো উৎসব এলেই বাড়তি টাকার প্রবাহে সচল হয়ে উঠে গ্রামের অর্থনীতি। এ সময় নিম্ন আয়ের মানুষের হাতেও টাকা যাচ্ছে। এতে তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। এটি ইতিবাচক দিক। তবে বাড়তি টাকার প্রবাহের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। এজন্য ঈদের পর ওই টাকা উৎপাদন খাতে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ থাকা জরুরি।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআইর সাবেক সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিনের হিসাবে জাকাত ও ফিতরার প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা, তৈরি পোশাকের ৩৫ হাজার কোটি, ভোগ্যপণ্যের বাজার ২৫ হাজার কোটি এবং ঈদ বোনাস, পরিবহণ ও অন্যান্য মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা সরাসরি ঈদকেন্দ্রিক লেনদেন হয়। এ ছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ২৭ হাজার কোটি টাকার কিছু অংশ ঈদকেন্দ্রিক লেনদেন হয়ে থাকে।
ঈদ ও বৈশাখী উৎসবকেন্দ্রিক সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় অভ্যন্তরীণ পোশাকের বাজারে। এ দুটি উৎসব ঘিরে সব শ্রেণির মানুষ তার সামর্থ্য অনুযায়ী পোশাক কেনাকাটা করে। তাই ঈদ ও বৈশাখী অর্থনীতির একটি বড় চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে পোশাকের বাজার। এবারও ১৫ রোজা পার না হতেই দোকানগুলোয় পোশাকের বেচাকেনা তিন থেকে চারগুণ
বেড়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ পোশাকের সবচেয়ে বড় জোগান আসছে পুরান ঢাকার উর্দু রোডের অভ্যন্তরীণ পোশাক মার্কেট থেকে। ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটসহ দেশের বিভাগীয়, জেলাসহ মফস্বল মার্কেটগুলোয় দেশি পোশাক সরবরাহ হচ্ছে এখান থেকে। দেশের বুটিক ও ফ্যাশন হাউসগুলোতেও বেচাবিক্রি জমে উঠেছে আশানুরূপভাবে।বিস্বতারিত