ঢাকা: কোকা-কোলা বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ সম্প্রতি সেন্টমার্টিন দ্বীপের সমুদ্র সৈকতে ৮ম বারের মতো সফলভাবে উপকূলীয় পরিচ্ছন্নতা ও সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ কর্মসূচি পালন করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে কোকা-কোলার ‘বর্জ্য মুক্ত বিশ্ব’ প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই আয়োজন করা হয়েছে। এর কাঙ্খিত উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে বৈশ্বিকভাবে কোম্পানির বাজারজাতের সমপরিমান বোতল অথবা ক্যান সংগ্রহ করা এবং পুনঃব্যবহারযোগ্য করা। ৩২তম আর্ন্তজাতিক উপকূল পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দুই দিনব্যাপী এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল।
এই কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে জলরাশিতে টেকসই ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে অবদান রাখা। এছাড়াও সামুদ্রিক বর্জ্যের কারণ নিয়ে আলোচনা করা এবং সামুদ্রিক বর্জ্য নিক্ষেপের নেতিবাচক প্রভাব সর্ম্পকে সচেতনতা তৈরি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থী, স্কুলের শিক্ষক এবং পেশাজীবিরা। তারা এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সমুদ্র সৈকতের বর্জ্য সংগ্রহ ও পৃথক করেন। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা সৈকতে ঘুরতে আসা মানুষদের সঙ্গে সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষার গুরুত্ব নিয়ে মতবিনিময় করেন এবং সচেতন করেন। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন। ওশান কনজারভেন্সির বিশ্বজুড়ে সামুদ্রিক বর্জ্যের যে ডাটাবেজে রয়েছে, সংগৃহীত আবজর্নাসমূহের তথ্য সংগ্রহ করে সেখানে অর্ন্তভুক্ত করা হবে। চলতি বছরে এই কর্মসূচির শ্লোগান ছিল ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ”। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় স্কুলের শির্ক্ষাথীদের মধ্যে সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখা বিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা সম্বলিত খাতা বিতরণ করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী প্রয়াস। এই উদ্যোগ হাজার হাজার মানুষকে সমুদ্র সৈকত, লেক ও জলরাশি থেকে মিলিয়ন পাউন্ডের আবর্জনা ও পরিত্যক্ত জিনিস সংগ্রহ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
গত আট বছরে এই কর্মসূচির আওতায় কোকা-কোলা বাংলাদেশ এবং কেওক্রাডং বাংলাদেশ এর সহায়তায় ৪,০০০ জন স্বেচ্ছাসেবী সেন্ট মার্টিন থেকে ৯,৬০০ কেজি সামুদ্রিক আবর্জনা সংগ্রহ করেছে। এ বছর ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক ১,২০০ কেজি সামুদ্রিক আবর্জনা সংগ্রহ করেছেন।
বাংলাদেশে কোকা-কোলার পাবলিক অ্যাফেয়ার্স এন্ড কমিউনিকেশন (পিএসি) ডিরেক্টর শামীমা আক্তার বলেন, “সেন্ট মার্টিনের নজরকাড়া সৌন্দর্য এবং দৃষ্টিনন্দন প্রবাল দ্বীপ বহু পর্যটককে আকৃষ্ট করে। এই কারণেই এখানে উপকূল রক্ষা করতে টেকসই সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আমরা আশা করছি, ৮ম বারের মত এই সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে বর্জ্য মুক্ত বিশ্ব বিনির্মানে সক্ষম হবো।”
কোকা-কোলা বাংলাদেশ স¤পর্কেঃ
কোকা-কোলা গোটা বাংলাদেশ জুড়ে হাজার হাজার ভোক্তার কোমলপানীয়ের চাহিদা পূরণ করছে, যা তাঁদের সতেজ ও চনমনে থাকতে বেশ সহায়ক। কোকা-কোলার পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছেÑকোকা-কোলা, ডায়েট কোক, ¯প্রাইট, ফান্টা, কিনলে সোডা, কোক জিরো, স্প্রাইট জিরো, রিমঝিম, থাম্স আপ চার্জড ও ফান্টা লিচি ইত্যাদি। কোকা-কোলা এদেশে ৫ শতাধিক লোকের সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে আরও ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। কোকা-কোলা নানা ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে কমিউনিটি বা সমাজকে শক্তিশালী করে তোলার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি কর্মসূচি হলো এভরি ড্রপ ম্যাটারস ও ওয়াশ। এ দুটি কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন বা পয়ঃনিষ্কাশন, হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্কুলে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া কোকা-কোলা বাংলাদেশে উইমেন বিজনেস সেন্টার নামে তার ব্যতিক্রমধর্মী ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে।
ওশান কনজারভেন্সির সম্পর্কে ঃ
ওশান কঞ্জারভেন্সি সমুদ্রের পক্ষ থেকে মানুষদের শিক্ষা ও ক্ষমতা দেয়। আর্কটিক থেকে শুরু করে মেক্সিকোর গালফ পর্যন্ত ও সেখান থেকে কংগ্রেসের হল পর্যন্ত সবখানেই ওশান কঞ্জারভেন্সি মানুষদের কাছে নিয়ে আসে আমাদের পানীয় সমস্যার সমাধানের জন্য। বিজ্ঞানের ক্ষমতার মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমুদ্র এবং তার প্রাণীদের রক্ষ্যার উদ্দেশ্যে কাজ করে।
কেওক্রাডং বাংলাদেশ সম্পর্র্কেঃ
কেওক্রাডং বাংলাদেশ তরুণদের দ্বারা পরিচালিত একটি অর্গানাইজেশন এবং বাংলাদেশে সামুদ্রিক ধংসাবশেষ প্রোগ্রামের দলপতি। কেওক্রাডং বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে দি ওশান কঞ্জারভেন্সি এর কান্ট্রি কোঅরডিনেটর হিসেবে কোস্টাল ক্লিনআপ কে উপস্থাপন করছে। আজকের দিনে এই গ্রুপ হাজার হাজার মানুষের কাছে সামুদ্রিক ধংসাবশেষের সচেতনতা তৈরি করতে পারে। কেওক্রাডং বাংলাদেশ ইউএসএ এর হোনোলুলুতে অনুষ্ঠিত ফিফথ ইন্টারন্যাশনাল মেরিন ডেবরি কনফারেন্স এ অংশগ্রহন করেছিল।