আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছেন দুই লাখেরও বেশি বাংলাদেশি পর্যটক। মালয়েশিয়ার পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি উপমন্ত্রী দাতুক খাইরুল ফিরদাউস আকবর খান এ তথ্য জানান মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) কুয়ালালামপুরের মেরকিউর হোটেলে এক অনুষ্ঠানে।
উপমন্ত্রী জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় ভ্রমণ করেছেন ২ লাখ ২ হাজার ৯২৯ জন পর্যটক, যা গত বছরের তুলনায় ১২৭ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার ভাষায়, এই অর্জন বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক আস্থা, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার দৃঢ়তার প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরব এসডিএন বিএইচডির সঙ্গে এক কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাতুক খাইরুল ফিরদাউস আকবর খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্য) প্রণব কুমার ঘোষ ও পাসপোর্ট উইং প্রধান ইয়াসিন কবির। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, পর্যটন উদ্যোক্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরাও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
উপমন্ত্রী বলেন, এই সমঝোতা স্মারক দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার নতুন অধ্যায় সূচনা করবে। বিশেষ করে পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে এই অংশীদারিত্ব উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ার পর্যটন উন্নয়ন সংস্থা ‘ট্যুরিজম মালয়েশিয়া’ বাংলাদেশের বাজারে প্রচারণা কার্যক্রম জোরদার করেছে। সংস্থাটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘ঢাকা ট্রাভেল মার্ট’ ও আসন্ন ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার’-এ অংশগ্রহণের পাশাপাশি ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব উদ্যোগ বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে মালয়েশিয়াকে আরও আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দাতুক খাইরুল ফিরদাউস বলেন, মালয়েশিয়া এখন বিশ্বমানের চিকিৎসা, শিক্ষা ও পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত। তিনি উল্লেখ করেন, জোহর মেডিকেল গ্রুপ (কেপিজে), কেএল ফার্টিলিটি, প্রিন্স কোর্ট মেডিকেল সেন্টার এবং হেল্প ইউনিভার্সিটির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বাজারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করছে।
উপমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। তার মতে, এই অংশীদারিত্ব দুই দেশের পারস্পরিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জনগণের কল্যাণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
নিরব এসডিএন বিএইচডির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়াস আহমদ বলেন, সংস্থাটি মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতার একটি সেতু গড়ে তুলতে কাজ করছে। তিনি বলেন, “প্রতিটি রোগী ও শিক্ষার্থী যেন পেশাদার, সৎ ও সহানুভূতিশীল সেবার অভিজ্ঞতা পান—এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
দাতুক খাইরুল ফিরদাউস বক্তব্যের শেষে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের স্থায়িত্ব কামনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা এমন এক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যেখানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া একে অপরের উন্নয়নের অংশীদার হবে।”


